বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনন্য শিল্পীদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনে এবার পাশে দাঁড়িয়েছেন দেশের সুপরিচিত আইনজীবী ও সমাজসেবক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। দেশের সংস্কৃতি রক্ষায় তাঁর এই পদক্ষেপকে অনেকেই দেখছেন সাহসী এবং সময়োপযোগী হিসেবে।
গত নয় মাসেরও বেশি সময় ধরে কন্ঠশিল্পী, সুরকার, যন্ত্রশিল্পী, গীতিকবি, অভিনয়শিল্পী, পান্ডুলিপিকার, শব্দ প্রকৌশলী, চাকরিচ্যুত রিপোর্টার এবং ক্যামেরাম্যানসহ বিভিন্ন শ্রেণির শিল্পীরা বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ তুলে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, বিটিভির অভ্যন্তরে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে ভয়াবহ দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে শিল্পীদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে আসছে।
শিল্পীদের এই আন্দোলন দীর্ঘদিন ধরে পর্যবেক্ষণ করেছেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন। তিনি একজন দায়িত্বশীল নাগরিক এবং সংস্কৃতিমনা ব্যক্তি হিসেবে নিজ উদ্যোগে এই আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে শিল্পীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি জানান, “বাংলাদেশের সংস্কৃতি আমাদের জাতীয় পরিচয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। একে রক্ষা করা আমাদের সবার দায়িত্ব।”
আইনি নোটিশ প্রেরণ
শিল্পীদের দাবির প্রতি ন্যায্যতা বিচার করে এবং বিটিভির চলমান অনিয়মের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনা করে ব্যারিস্টার খোকন বিটিভি কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে ৭ দিনের সময় বেঁধে আইনি নোটিশ প্রেরণ করেছেন। এই নোটিশে তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫-এর মধ্যে চিহ্নিত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হলে তিনি হাইকোর্টে রিট করার জন্য প্রস্তুত।
শিল্পীদের প্রতি অঙ্গীকার
ব্যারিস্টার খোকন আরো জানান, বিটিভির দুর্নীতি শুধু শিল্পীদের জন্য নয়, পুরো দেশের সংস্কৃতির জন্য হুমকিস্বরূপ। বিশেষ করে, কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই বিটিভির রিপোর্টারদের চাকরিচ্যুত করার ঘটনাকে তিনি “অন্যায় ও অগ্রহণযোগ্য” বলে অভিহিত করেছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, “এমন অনিয়মের বিরুদ্ধে আমি সব ধরনের আইনি সহায়তা প্রদান করব এবং চাকরিচ্যুতদের অধিকার আদায়ে সর্বোচ্চ লড়াই চালিয়ে যাব।”
শিল্পীদের প্রতিক্রিয়া
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের এই উদ্যোগে আন্দোলনরত শিল্পীদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। এক কন্ঠশিল্পী বলেন, “আমরা এতদিন ধরে লড়াই করছি, কিন্তু কেউ আমাদের পাশে এসে দাঁড়ায়নি। ব্যারিস্টার খোকনের এই সহযোগিতা আমাদের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।”উচ্চ আদালতের পদক্ষেপের অপেক্ষা
শিল্পীরা মনে করছেন, ব্যারিস্টার খোকনের আইনি পদক্ষেপ দেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করবে। অনেকেই আশাবাদী, বিটিভির অনিয়মের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের হস্তক্ষেপ দেশের সংস্কৃতির প্রতি নতুনভাবে দৃষ্টি আনবে।
বাংলাদেশের সংস্কৃতি রক্ষার এই আন্দোলনে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের সমর্থন নিঃসন্দেহে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এখন দেখার বিষয়, বিটিভি কর্তৃপক্ষ ৭ দিনের মধ্যে যথাযথ ব্যবস্থা নেয় কি না, নাকি বিষয়টি উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়।