মাদারীপুর থেকে ফোরকান আহম্মেদ: দেশের আপদকালীন সময়ে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ঋণ গ্রহীতা কৃষক এবং ঋণ প্রদানকারী ব্যাংক কর্মকর্তা কর্মচারীরা। অনেক ব্যাংক কর্মকর্তার দায়িত্বে ক্ষুদ্র কৃষি ঋণ বিতরণ এবং প্রদত্ত ঋণ আদায় না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তারা পেনশনে গিয়েও ঋণ আদায় না হওয়ায় তারা তাদের চাকুরী শেষের ন্যায্য পাওনা তুলতে না পেরে অনেকেই মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
একটি পরিসংখ্যানে দেখা যায় নি¤œ আয়ের কৃষকদের দুঃখ দুর্দশার কথা বিবেচনা করে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত কৃষি ঋণ সুদসহ মওকুফ করে দিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯১ইং সনের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিতরণকৃত ৫০০০/- টাকা পর্যন্ত ক্ষুদ্র কৃষি ঋণ সুদসহ মওকুফ করে দিয়েছিলেন তৎকালীন ৪ দলীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ফলে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীদের মধ্যে ৫,০০০/- টাকার কৃষি ঋণ গ্রহণের আগ্রহ বেড়ে যায়। পরবর্তীতে ১৯৯৮ইং সনের ভয়াবহ বন্যার কারণে সরকার ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের মধ্যে কৃষি ঋণ বিতরণে উদারনীতি গ্রহণ করে এবং কোন রকম দলিল পর্চা বন্ধক ছাড়াই ক্ষুদ্র চাষী বা প্রান্তিক চাষীদের মধ্যে কৃষি ঋণ বিতরণের নির্দেশ দেয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সোনালী ব্যাংকের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায় ঐসময় তলিয়ে যাওয়া সড়কের ৩/৪ ফুট পানিতে লাইনে দাড়ানো মানুষের মাঝেও কৃষি ঋণ বিতরণে বাধ্য হন ব্যাংক কর্মকর্তারা। তখন সরকারের নির্দেশ ছিল ছবিসহ কোন প্রাপ্তিক চাষী ঋণ নিতে আসলেই তাকে ঋণ দিতে হবে। দারুন আর্থিক সংকটে থাকা কৃষকরা অতীতের মতই জাতির পিতার উত্তরসূরী জননেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসলেও পূর্বের সরকারের ন্যায় গরীব কৃষকদের ৫০০০/-টাকা পর্যন্ত কৃষি ঋণ সুদসহ মওকুফ করে দেবেন বলে আশা করেছিল।
উল্লেখ্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র নেতা যিনি স্বাধীন বাংলাদেশের কৃষকদের ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা মওকুফ করে দিয়েছিলেন। তাঁর সুযোগ্য উত্তরসূরী জননেত্রী শেখ হাসিনাও পূর্বেকার সরকার প্রধানদের মতো প্রান্তিক চাষীদের ক্ষুদ্র ঋণ সুদসহ মওকুফ করবেন এটা আশা করা সাধারণ মানুষের অমূলক নয়। ঋণ বিতরণকারী ব্যাংক কর্মকর্তাগণের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অনেক ঋণ গ্রহীতার ছবি বিনষ্ট হয়ে গেছে এবং অনেকে মারা যাওয়ায় অথবা স্থান পরিবর্তন করায় তাদেরকে নির্ধারিত স্থানে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।
উপমহাদেশের পেছনের ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, অবিভক্ত বাংলার প্রথম নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেরেবাংলা একে ফজলুল হক প্রজাস্বত্ত্ব আইন পাশ করে জমির উপর কৃষকের মালিকানা কায়েম করে অমর হয়ে আছেন। ১৯২২ সালে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ভারতীয় কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সভায় যোগদান শেষে আসাম রাজ্যে ফিরে গিয়ে ‘লাঙল যার জমি তার’ শ্লোগান তুলে ইতিহাস হয়ে রয়েছেন। একইভাবে বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও কৃষকদের ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা মওকুফ করে অমর হয়ে আছেন।
জাতির পিতার সুযোগ্য উত্তরসূরী দেশমাতা শেখ হাসিনা এখন রাষ্ট্র ক্ষমতায়। দুঃখী কৃষকদের প্রত্যাশা দেশরতœ শেখ হাসিনা কৃষক ও ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিপদ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্ষুদ্র ঋণ সুদসহ মওকুফ করে খেটে খাওযা মানুষগুলোকে আরো উৎসাহ নিয়ে কাজ করার তথা নিরলস শ্রমের মাধ্যমে উন্নত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় অংশ নেয়ার সুযোগ করে দেবেন।